রাজধানী ঢাকায় আজ বুধবার সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। পুলিশের দেওয়া ২৩ শর্তে উভয় দলকেই সমাবেশ করতে অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
অপরদিকে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে বিশেষ সহকারী সৈয়দ মামুন মোস্তফা সই করা এক চিঠিতে বিএনপির সমাবেশের তথ্য জানানো হয়। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে দেওয়া চিঠিতে তাদের দলকে দেওয়া শর্তের কথা উল্লেখ করেছে ডিএমপি।
যেসব শর্তে আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি
১। এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২। স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লেখিত শর্তগুলো যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩। অনুমতি পাওয়া স্থানেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪। নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের চারদিকে উন্নত রেজুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮। শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনোক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৯। অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১০। অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
১১। আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
১২। ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য দেওয়া বা প্রচার করা যাবে না।
১৩। সমাবেশ কার্যক্রম ছাড়া মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
১৪। সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৫। অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা) সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৬। কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৮। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ বা বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
১৯। উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২০। কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।
২১। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
২২। উল্লেখিত শর্তাদি পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৩। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
এদিকে নয়াপল্টনে বিএনপির বুধবারের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় চলছে মাইকিংসহ নানামুখী প্রচার। মাইকে সবাইকে সমাবেশে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে।